Donations are essential to keep Write Out Loud going    

২৭ ডিসেম্বর দুই হাজার আঠারো

entry picture

তাড়াতাড়ি করতেই দেরী হয়ে গ্যালো। উন্নত মানের খাবার খাওয়া হল রাতে, নাগদান হয়ে বসে আছি এখন। ভূড়ির গৌরব স্পন্দনে রাত্রী পৃথিবীর ভার টের পাওয়া যাচ্ছে, স্থূলতারই ভারে কিনা জানি না মগজ কেটে যাচ্ছে উন্নত মানের বিষন্নতায়।

শিয়ালের ঘাড়ে চেপে দ্রাক্ষার কালিমা-দোষারোপ— বহুত দিন ধরেই তো লেপ্টে আছে ব্যর্থতার মতন জীবনের ওপেন সিক্রেটগুলি, তাই না? 

অনেকগুলি মুখোশ-
মুখোশ স্বভাবতই একটা দুরত্ব রচনাকারী চিজ হে।

তোমার ফেলে আসা শহরে তো আবার গ্যালাম। ছোট শহর, মফস্বল, মফস্বলের রোদ। ঝটিকা-জন সমাগম। বাসস্ট্যান্ডের ফলের দোকান। এরকম একটা দোকানে অনেকগুলি কমলার সামনে অনেকখণ দাড়ায় থেকে এক হাজার টাকা বিকাশ করলাম। অটোমোবাইল আর টাকার গন্ধের ঝাঁঝে কমলার গন্ধ পোষ মেনে আছে। নকল চেরিগুলির রং ছবি তুলে রাখার মতন লাল। নিজেকে ওই রেনে ম্যাগরিতের ছবির ঐ ফিটফাট একটু আবার মাপা বিহ্বলতা সম্বলিত বিমূঢ় উইট চর্চা করে থাকবেন স্যুট টাই পরা ছেলে চরিত্রগুলোর মতন মনে হচ্ছিল।

চোখভর্তি সরিষাক্ষেতের প্যানারোমার ভেতর হাটু ডুবিয়ে দাড়িয়ে আছি। নাকমুখ জবান-শরীর ভরা হলুদ ফুলের মউ মউ ঘ্রাণ, আমার মুখের সামনে একটা ইয়া বড় কায়দার ক্যামেরা ধরা। ক্যামেরার লেন্স দিয়ে আমি হয়ত তোমাকে দেখছি কিন্তু আমার মুখ তুমি দেখতে পাচ্ছ না।

যা নাই কি যেন খুঁজতেছি সেইটা                                                                                                                          জানি যে সেইটা আর এইখানে নাই। 

(একটা ত্বকের সুরক্ষা প্রসঙ্গে বিঙ্গপ্তি-বিলবোর্ডের উচ্ছ্বল লালিমায় টাঙিয়ে রাখা ঝলমলে মেয়ে মানুষের ছবির দিকে তাকিয়ে তোমাকে মনে পড়ে গ্যালো নাকি জোর করে মনে মনে তোমাকে ঐখানে ভেবে ফেল্লাম! সরি আরকি)
নদীটার সাথে সূর্যটা-
'ব্ল্যুজ এণ্ড রোদ'
ব্রহ্মপুত্রের মিটিমিটি ঢেউ

তোমার হাওয়া-ওড়নার ফলকে এরকম এই রোদটাই ধরা পরে ছিল। সুকান্ত বেকারীর চাঁদটা এখন আধ টুকরা স্থির প্রশ্নবোধক, তার সাদা আলোয় ঘোলা ঘোলা ভয়, নড়াচড়া করছে মনের ভেতর। 

জমতে জমতে স্তুপ করে রাখা সমস্যার ট্রি প্লানট্রেশন, ওদেরকে এখন চাইলে কিছুক্ষণ ভুলে থাকা যায় কিনা দেখা যাক। জীবনকে তার চাহিদা মিটিয়ে দিতে হবে, রাস্তায় পা ফসকে পড়ে গ্যালে নিজেকে যেমন অনেক ছোট অচল মনে হয়, একশ ত্রিশ টাকার জিনিস কিনে পাঁচশ টাকার নোট দিয়ে অঙ্ক মেলাতে না পারলে- আন্ডারওয়্যার ছাড়া একদিন অনেকখণের জন্য বাইরে বেরোলে যে রকমটা লাগে, এখন কোথায় আছেন এই খুব নিশপিশ প্রয়োজনীয় প্রশ্নের যুতসই একটা জবাব তিন সেকেণ্ডের ভিতর দিয়ে উঠতে না পারলে যেরকম লাগে, আমার ইদানিং এরকম নানান রকম ভয় লাগে। এই ভয়ংকর নিশানাদের গুম করে দিয়ে একা চাঁদ তার আলোর আয়না দিয়ে এই পৃষ্ঠা উল্টিয়ে ভুলে থাকা অপলক প্রাগৈতিহাসিক রাতের কাপা কাপা রুপ-বেণী- ভাঁজ খুলে দিচ্ছে। 

জাদু দিচ্ছে কুয়াশার কাঁজল। শুনশান শীতের রাতের জমানো নির্জনতার খোলে পাতা দূরের হাইওয়ে ব্রীজটাকে গোত্তা দিয়ে একটা ভারী দূরপাল্লা হয়ত একটা ট্রাকই হবে যার পিঠ বোঝাই পাঁচ টনের সমগ্র বাংলাদেশ নিয়ে চলে যাচ্ছে দূর কোন গন্তব্যের পেটে। অন্ধকার আর সরপুটি, গ্রাসকার্প পেটে নিয়ে একটা সবুজ ঠান্ডা পুকুর একটা কবরকে পাশে নিয়ে নির্দ্বিধার মত নাভীর গভীরে এক গ্রামীণ নারীর স্বপ্ন দৃশ্যে বুদ হয়ে আছে। শ্যাওলার গন্ধের কাছ থেকে পা চালিয়ে সরে আসি। উঠানের বাতি ডেকে নিয়ে আসে। একটা ঝিমধরা ভাব এতক্ষণ দানা বেঁধে ছিল। পলক হাতড়ে ঘরে ঢুকে ফট করে সুইচ জ্বালিয়ে দিতেই আলোর বিদ্যুৎ এক ঝটকায় চোখের নিমেষ থেকে অন্ধকার মেশানো ঝিমভাবটাকে সপাটে ছাড়িয়ে নিল। একটা অভ্যস্ততা চিরদিনের মত মেজাজের স্মৃতিতে নেমে ভেসে চলে গেল আরেকটা বার, ভ্রু কুচকে।

শীতের গ্রাম বাঙলার অবকাশে এসে ভেজা খড়ের হিমি ছড়ানো গন্ধের নিচে চাপা পরে যাব এ রকম ভাবালুতা ছিল। কিন্তু হচ্ছে না। মনের একটা ভেতরে অস্থিরতা রিংটোনের মতন করে বাজছে। একটা অবুঝ সংশয় সুর। ঠাণ্ডা লাগছে। টিনের চালে টপ টপ করে পড়ছে কুয়াশার মেট্রোনাম। কোমলংমার ঘর ছেড়ে আসা বায়ূপ্রবাহ ও অন্যান্যকে খিল দিয়ে কম্বলের ভিতর ঢুকে যাচ্ছি।
একটু ঘুম দরকার, অনেক ঘুম।

◄ kings of leon এর use somebody শুনতে শুনতে আর জী. দা.'র নির্জন স্বাক্ষর পড়তে পড়তে এই বন্দেগী

Comments

No comments posted yet.

If you wish to post a comment you must login.

This site uses cookies. By continuing to browse, you are agreeing to our use of cookies.

Find out more Hide this message